৬৩ নাগরিকের বিবৃতি: বাঁশখালীতে গ্রেপ্তার প্রকৌশলীর মুক্তি দাবি

29 May 2021 | The Prothom Alo 
---------------------------------------- 

কারাগার । প্রতিকী ছবি । দৈনিক প্রথম আলো

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার প্রকৌশলীর মুক্তি দাবি করেছেন দেশের ৬৩ জন নাগরিক। আজ শনিবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তাঁরা এই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। 

স্থানীয় পুলিশ আজ প্রথম আলোকে জানায়, কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় শুক্রবার রাতে বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শাহনেওয়াজ চৌধুরী (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গন্ডামারায় নির্মাণাধীন কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে পোস্ট করলেও তিনি কী লিখেছিলেন, তা পুলিশ জানায়নি। 

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই পোস্টের মাধ্যমে শাহনেওয়াজ চৌধুরী প্রকল্পের বিষয়ে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেছেন। যুবসমাজকে লেখনীর মাধ্যমে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এটাকে কোনোভাবেই আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা মনে হওয়ার যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই। আমরা মনে করি, জোরপূর্বক ভিন্নমত দমনের উদ্দেশ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলোর অধীনে কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মকর্তার দায়ের করা ভিত্তিহীন ও বিদ্বেষমূলক মামলায় বাঁশখালী থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।’ 

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাঁশখালীর বিতর্কিত কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের স্বার্থ রক্ষা করতে ২০১৬, ২০১৭ ও সর্বশেষ ২০২১-এর ১৭ এপ্রিলে পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত ১২ জন নিরীহ শ্রমিক ও গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। নিহত ১২ জনের ৬ জনই গণ্ডামারার অধিবাসী। যেখানে সব মহল থেকে এসব গুলিবর্ষণের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি প্রদান করার দাবি উঠেছে, সেখানে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে সরকার বরং ভুক্তভোগীসহ সবার কথা বলার অধিকারের সংকোচন করছে নানাভাবে।’ 

বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে বাঁশখালীতে পুলিশের গুলিতে গ্রামবাসী-শ্রমিকদের নিহত-আহত হওয়ার ঘটনায় কোনো নিরপেক্ষ তদন্ত ও কার্যকর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ হয়নি বরং ৩,৫৬২ জন নিরস্ত্র শ্রমিক ও এলাকাবাসীকে আসামি করে প্রকল্প উদ্যোক্তা ও পুলিশ মামলা দায়ের করেছে, যা অব্যাহত হয়রানির সুযোগ সৃষ্টি করছে।’ 

বিবৃতিদাতারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘নিপীড়নমূলক ও সংবিধানবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করে এটি বাতিলের দাবি জানান। 

বিবৃতিদাতারা হলেন সুলতানা কামাল, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, খুশী কবির, হোসেন জিল্লুর রহমান, বদিউল আলম মজুমদার, আনু মুহাম্মদ, ইফতেখারুজ্জামান, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শহিদুল আলম, ফারাহ কবীর, শিরীন পারভীন হক, শামসুল হুদা, সি আর আবরার, রেহনুমা আহমেদ, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, আসিফ নজরুল, জাকির হোসেন, ওমর তারেক চৌধুরী, সুব্রত চৌধুরী, রোবায়েত ফেরদৌস, নাসরিন খন্দকার, মাইদুল ইসলাম, সাদাফ নূর, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, গৌরাঙ্গ নন্দী, কাজী জাহেদ ইকবাল, সাঈদ ফেরদৌস, সামিনা লুৎফা, শরীফ জামিল, রেজাউর রহমান, সায়দিয়া গুলরুখ, সায়েমা খাতুন, আহমেদ স্বপন মাহমুদ, মনোয়ার মোস্তফা, এস এম নাজের হোসেন, শমশের আলী, জাকির হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন, অরূপ রাহী, মাহা মির্জা, শামসুদ্দোহা, নূর আলম শেখ, আমিনুজ্জামান মিলন, নুরুল আলম মাসুদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকতউল্লাহ মারুফ, সেকেন্দার আলী মিনা, সোহেইল জাফর, এস এম তৌহিদুল ইসলাম শাহাজাদা, রাশেদ রিপন, সোহানুর রহমান, রোজিনা বেগম, হানা শামস, ফারজানা আক্তার, জান্নাতুল মাওয়া, বীথি ঘোষ, অমল আকাশ, টেংকু মেহেদী, মুনেম ওয়াসিফ, মাহবুব আলম ও হাসান মেহেদী।