বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যা: বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন ৬৮ নাগরিক

17 April 2021 | The Desh Rupantar 
------------------------------------------ 


চট্টগ্রামের বাঁশখালীর কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে ৫ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৬৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক। 

শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন। 

বিবৃতিতে তারা বলেন, শনিবার সকালে বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত শ্রমিকরা বকেয়া পাওনার দাবিতে সমাবেশ করলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে এ পর্যন্ত পাঁচজন শ্রমিক নিহত ও অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বকেয়া মজুরির দাবিতে সমাবেশরত নিরীহ শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ একটি গর্হিত অপরাধ ও গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য লজ্জাকর। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। 

এতে আরও বলা হয়, বকেয়া মজুরির দাবিরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনা আইনের শাসনের পরিপন্থী। যেখানে জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের কাজ সেখানে এমন নির্মম ও অবিবেচনাপ্রসূত হত্যাকাণ্ড ক্ষমতার অপপ্রয়োগ এবং চরম অনাচারের শামিল। বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন অনুসারে পুলিশ কোন অবস্থাতেই নিরীহ শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানোর অনুমতি পেতে পারে না। 

বিবৃতি দাতারা বলেন, পুলিশ প্রবিধান ১৯৪৩-এর বিধান অনুসারে নিরাপত্তার জন্য হুমকিমূলক সমাবেশ অন্য কোনোভাবে ছত্রভঙ্গ না করা গেলে সর্বশেষ পন্থা হিসেবে নূন্যতমভাবে শক্তি প্রয়োগের বিধান রয়েছে এবং সে ক্ষেত্রে গুলি চালানোর আগে বারবার সাবধান করতে হবে এবং তা চালাতে হবে কাউকে হত্যা করা না বরং সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার উদ্দেশ্য থেকে। আমরা এই আইনি বিধান বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিপালন করতে দেখিনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আইন অমান্য করার দায় সাধারণ নাগরিকদের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের ও গুলিবর্ষণের ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার-বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি এবং দোষী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। 

করোনা মহামারিতে শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ না করা শ্রম আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন তারা। একই সঙ্গে শ্রমিকদের মজুরি প্রদানে অবহেলা করার কারণে কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সরকারের যে চুক্তি হয়েছে তা বাতিলের দাবিও জানান তারা। 

বিবৃতি দাতাদের মধ্যে রয়েছেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মানবাধিকার নেত্রী ড. হামিদা হোসেন, সুলতানা কামাল, অধ্যাপক আকমল হোসেন, কলামনিস্ট ও লেখক আলী ইমাম মজুমদার, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানসহ প্রমুখ।