বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে নাগরিক সমাজের বিবৃতি


17 April 2021

আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ আজ বাঁশখালী কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিরীহ শ্রমিকদের হত্যার ঘটনায় নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রকাশের জন্য আপনার গণমাধ্যমে প্রেরণ করছি : 

আজ শনিবার সকালে বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত শ্রমিকরা বকেয়া পাওনার দাবিতে সমাবেশ করলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে এ পর্যন্ত পাঁচজন শ্রমিক নিহত ও অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বকেয়া মজুরির দাবিতে সমাবেশরত নিরীহ শ্রমিকদের উপর গুলিবর্ষণ একটি গর্হিত অপরাধ ও গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য লজ্জাকর। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। বকেয়া মজুরির দাবিরত শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর ঘটনা আইনের শাসনের পরিপন্থী। যেখানে জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের কাজ সেখানে এমন নির্মম ও অবিবেচনাপ্রসূত হত্যাকাণ্ড ক্ষমতার অপপ্রয়োগ এবং চরম অনাচারের শামিল।

বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন অনুসারে পুলিশ কোন অবস্থাতেই নিরীহ শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর অনুমতি পেতে পারে না। পুলিশ প্রবিধান ১৯৪৩-এর বিধান অনুসারে নিরাপত্তার জন্য হুমকিমূলক সমাবেশ অন্য কোনভাবে ছত্রভঙ্গ না করা গেলে সর্বশেষ পন্থা হিসেবে নূন্যতমভাবে শক্তি প্রয়োগের বিধান রয়েছে এবং সেক্ষেত্রে গুলি চালানোর আগে বার বার সাবধান করতে হবে এবং তা চালাতে হবে কাউকে হত্যা করা না বরং সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার উদ্দেশ্য থেকে। আমরা এই আইনি বিধান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিপালন করতে দেখিনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আইন অমান্য করার দায় সাধারণ নাগরিকদের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের ও গুলিবর্ষণের ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার-বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি এবং দোষী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

করোনা অতিমারির এই দুর্যোগে শ্রমজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা যেখানে এমনিতেই দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে, সেখানে মজুরি না দেয়া শ্রম আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এস আলম গ্রুপের মতো ধনী শিল্পগোষ্ঠী কেন শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেনি তার যথাযথ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমরা সকল শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ করার দাবি জানাই। একইসাথে শ্রমিকদের মজুরি প্রদানে অবহেলা করার কারণে এস. আলম গ্রুপের সঙ্গে কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সরকারের যে চুক্তি হয়েছে তা বাতিলের দাবি জানাই।

উল্লেখ্য যে, এই বাঁশখালি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরে এর আগে ২০১৬ ও ২০১৭ সালেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এবং সেসব ঘটনায় কমপক্ষে মোট ৬ জন নিহত ও শতাধিক আহত হলেও - ঐ হত্যাকাণ্ডের কোন সুষ্ঠু বিচার হয়নি।

বিবৃতি স্বাক্ষরকারী :
  1. ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র
  2. ড. হামিদা হোসেন, মানবাধিকার কর্মী
  3. আকমল হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  4. সুলতানা কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা
  5. আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব
  6. প্রফেসর আনু মুহাম্মদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
  7. খুশি কবীর, সমন্বয়কারী, নিজেরা করি
  8. হোসেন জিল্লুর রহমান, নির্বাহী চেয়ারম্যান, ব্র্যাক
  9. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ
  10. শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
  11. শহিদুল আলাম, আলোকচিত্রী
  12. শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, এএলআরডি
  13. অধ্যাপক পারভীন হাসান, সেন্ট্রাল উইমেনস্ ইউনিভার্সিটি
  14. ফরিদা আখতার, নারী অধিকার কর্মী
  15. সি আর আবরার, অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  16. ব্যারিস্টার সারা হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
  17. রেহনুমা আহমেদ, লেখক
  18. অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান নির্বাহী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)
  19. আদিলুর রহমান খান, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
  20. শিরীন হক, নারী অধিকার কর্মী
  21. হাসনাত কাইউম, অ্যাক্টিভিস্ট আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
  22. ড. জাহেদ ইকবাল, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
  23. ড. আসিফ নজরুল, প্রফেসর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  24. ফেরদৌস আজিম, প্রফেসর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  25. রোবায়েত ফেরদৌস, প্রফেসর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  26. ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আহ্বায়ক, প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষা মঞ্চ
  27. মোবাশ্বার হাসান, লেখক ও গবেষক
  28. রেজাউর রহমান লেনিন, গবেষক এবং অধিকারকর্মী
  29. জোবায়দা নাসরিন, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  30. সাদাফ নূর-এ ইসলাম, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
  31. সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
  32. রায়ান হাসান, নির্বাহী পরিচালক, এনজিও ফোরাম অন এডিবি
  33. নূর খান লিটন, মানবাধিকার কর্মী
  34. গৌরাঙ্গ নন্দী, সাংবাদিক
  35. শাহনাজ হুদা, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  36. তানজিম ওয়াহাব, শিক্ষক, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট
  37. ডা. নাইলা জেড খান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ
  38. মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
  39. ওমর তারেক চৌধুরী, লেখক ও অনুবাদক
  40. আজফার হোসেন, শিক্ষক, গ্র্যান্ড ভ্যালি স্টেইট ইউনিভার্সিটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
  41. মাহা মির্জা, গবেষক ও অধিকারকর্মী
  42. আহমেদ কবির কিশোর, ব্যঙ্গচিত্র-শিল্পী
  43. নাসিরুদ্দিন এলান, মানবাধিকার কর্মী
  44. সায়দিয়া গুলরুখ, সাংবাদিক
  45. নাসরীন খন্দকার, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
  46. অরূপ রাহী, সঙ্গীত শিল্পী ও লেখক
  47. এম. জাকির হোসেন খান, নির্বাহী পরিচালক, চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ
  48. সারওয়াত শামীন, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  49. জান্নাতুল মাওয়া, আলোকচিত্রী ও শিক্ষক, পাঠশালা
  50. শেখ নূর আলম, মংলা নাগরিক সমাজ
  51. তৌহিদুল ইসলাম শাহজাদা, নির্বাহী পরিচালক, প্রান্তজন
  52. মাইদুল ইসলাম, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
  53. লুবনা মরিয়ম, আর্টিস্টিক ডিরেক্টর, সাধনা
  54. অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান, আইনজীবী
  55. রেবেকা সুলতানা, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক, সমগীত
  56. কাজী ওমর ফয়সাল, শিক্ষক ও গবেষক
  57. সেকান্দার আলী মিনা সুমন, নির্বাহী পরিচালক, সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি
  58. তানজিম ওয়াহাব, শিক্ষক, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট
  59. অগ্রদূত দাশগুপ্ত, সমন্বয়কারী, সংশপ্তক
  60. রাশেদ রিপন, নির্বাহী পরিচালক, পরিবর্তন-রাজশাহী
  61. অমল আকাশ, শিল্পী ও সংগঠক, সমগীত
  62. মুক্তাশ্রী চাকমা সাথী, সঙ্গৎ : নারী অধিকার জোট
  63. তাসাফি হোসেন, মানবাধিকার কর্মী
  64. বীথি ঘোষ, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী, সমগীত
  65. অপরাজিতা সংগীতা, চলচ্চিত্র নির্মাতা
  66. রোজিনা বেগম, গবেষক
  67. মারজিয়া প্রভা, অধিকারকর্মী
  68. হাসান মেহেদী, বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি)